কল্যাণ অধিকারী, স্টিং নিউজ, হাওড়া: খাদ্যে ভেজাল বা খাদ্য বানাতে কতটা উপযোগী তেল ব্যবহার হচ্ছে এ বিষয় বারেবারে প্রশ্ন ওঠে। টাস্ক ফোর্সের ধরপাকড়ে কিছুদিন শিরদাঁড়া সোজা করে নেয়। তারপর যেই কে সেই। পোড়া তেলে মাছ ভাজা আর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বানানো খাবার খেয়ে শরীরে বুনছে বিষ। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাওড়া গঙ্গার পাড়ে গজিয়ে ওঠা হোটেলে হানা দিল হাওড়া পুরসভা ও টাস্ক ফোর্স।
গঙ্গার পশ্চিম পাড়ে হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন হোটেলগুলিকে নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। ওখানকার বজ্র সরসরি মিশছে গঙ্গায়। যা দূষিত করছে গঙ্গাকে। ২০১৪ সালে গঙ্গার দূষণ রুখতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পক্ষ থেকে হাওড়ায় গঙ্গার পাশের হোটেল বন্ধ, গঙ্গা বজ্র ফেলা নিষেধ সহ একাধিক নির্দেশ দেওয়া হয়। কাজও হয়। কয়েক মাস বন্ধ হয়ে যায় ওই সমস্ত হটেল। তারপর ধীরেধীরে শুরু হয় হোটেল খোলা। অস্বাস্থ্য পরিবেশে খাবার তৈরির আবারও অভিযোগ সামনে আসে। সেইমত শুরু হয় অভিযান।
পুরসভা সূত্রে জানা গেছে, রাজ্যের খাদ্য সুরক্ষা দফতর, হাওড়া পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর এবং উপভোক্তা বিষয়ক দফতর ও জেলা শিল্প দফতরের আধিকারিকেরা মিলিয়ে গঠিত টাস্ক ফোর্সের একটি দল হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন গঙ্গার ধারের একাধিক হোটেলে অভিযান চালায়। হাতেহাতে মিলেছে ফল। দেখা গিয়েছে একাধিক হোটেলে লাইসেন্স টুকুও নেই। খাবার বানাবার জায়গা সম্পূর্ণ রূপে অস্বাস্থ্যকর। এদের বিরুদ্ধে গ্রিনবেঞ্চে চলছে মামলা। আপাতত খাবার সংগ্রহ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের ফুড টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হবে। যদি কোনও রকম অসঙ্গতি পাওয়া যায়, তা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অনিমেশ সাঁতরা, শান্তনু পুরকাইত সহ একাধিক মানুষের কথায়, হাওড়া স্টেশন থেকে বেড়িয়ে যাত্রীরা সোজা চলে আসে এই সমস্ত হোটেলে। কম খরচে খাওয়া দাওয়া করে ফিরে যায় ঘরে। এর আড়ালে চলে ভেজাল তেলে রান্না ও রঙ মেশানো খাবার বিক্রি। মাঝেমধ্যে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর চলে আসে। তারপর আবার শুরু কারবার। এই কারবারে লোকাল নেতাদের হাত আছে। ওঁদের জন্য এত রমরমা। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ গঙ্গা সাফ রাখতে পরিকল্পনা করছে। অথচ হোটেলগুলোর বজ্র পড়ছে গঙ্গায়। অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।